শীতকাল এলেই সর্দি-কাশি, নাক বন্ধ কিংবা বুকে কফ জমার সমস্যা বাড়ে। আবার বাড়তি বায়ুদূষণও শ্বাসনালিতে জ্বালা সৃষ্টি করে। এ সময় অনেকেই ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ, আদা-ভরা লজেন্স কিংবা মেনথল ইনহেলার ব্যবহার করেন। এগুলো কিছুটা আরাম দিলেও সম্পূর্ণ উপশম পেতে অনেক সময় স্টিম নেওয়া ও ওষুধের প্রয়োজন হয়। তবে কখনো কখনো সবচেয়ে আরামদায়ক ও কার্যকর সমাধান পাওয়া যায় রান্নাঘরের মসলার তাকেই।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ব্যবহৃত একটি ঘরোয়া উপায় হলো—ঘি (ক্ল্যারিফায়েড বাটার), বিট লবণ (কালা নামক) ও গোলমরিচের মিশ্রণ। আয়ুর্বেদে নাক বন্ধ, হালকা কফ-জমা ও কাশি প্রশমনে এটি বহুল ব্যবহৃত। তবে প্রশ্ন হলো—এই ঘরোয়া উপায়টির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কতটা শক্ত?
এই তিন উপাদানের সমন্বয়ে সরাসরি বড় পরিসরের ক্লিনিক্যাল গবেষণা খুব বেশি না থাকলেও, প্রতিটি উপাদানের আলাদা আলাদা বৈজ্ঞানিক গুণাগুণ বিশ্লেষণ করলে কেন এই মিশ্রণটি এতদিন ধরে বিশ্বাসযোগ্য—তার ব্যাখ্যা মেলে। বিভিন্ন গবেষণায় ঘি, গোলমরিচ ও বিট লবণের স্বতন্ত্র স্বাস্থ্যগুণ উঠে এসেছে, যা হালকা কনজেশনে উপকার করতে পারে। তবে এই মিশ্রণের ওপর আরও বিস্তৃত বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
কীভাবে কাজ করে ঘি, বিট লবণ ও গোলমরিচ?
এই তিনটি উপাদান আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এবং একসঙ্গে ব্যবহারে তারা পরস্পরের কার্যকারিতা বাড়াতে পারে।
ঘি:
ঘি আয়ুর্বেদে শুধু রান্নার উপাদান নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ ‘মেডিসিনাল ক্যারিয়ার’ হিসেবে বিবেচিত।
গোলমরিচ:
এই মিশ্রণের সবচেয়ে কার্যকর উপাদান হিসেবে ধরা হয় গোলমরিচকে। এতে থাকা পাইপারিন শ্বাসনালির জন্য উপকারী।
বিট লবণ (কালা নামক):
বিট লবণ খনিজসমৃদ্ধ এবং ঐতিহ্যগতভাবে হজমের জন্য ব্যবহৃত হয়।
একসঙ্গে ব্যবহারে কী হয়?
এই ঘরোয়া উপায়টি সাধারণত হালকা ও স্বল্পমেয়াদি কনজেশনে কিছুটা আরাম দেয়।
অনেক পরিবারে এটি একটি পরিচিত রীতি—হালকা গরম ঘির সঙ্গে এক চিমটি গুঁড়া গোলমরিচ ও সামান্য বিট লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে বা রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়া।
সতর্কতা
এই ধরনের প্রাকৃতিক উপায় গুরুতর বা দীর্ঘস্থায়ী কনজেশনের ক্ষেত্রে কার্যকর নাও হতে পারে এবং চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। উপসর্গ দুই-তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে বা বাড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।